০৫:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
পরনের কাপড় ছাড়া কিছুই নাই" — অগ্নিকাণ্ডে সব হারিয়ে নিঃস্ব আনোয়ারা বেগম

পরনের কাপড় ছাড়া কিছুই নাই” — অগ্নিকাণ্ডে সব হারিয়ে নিঃস্ব আনোয়ারা বেগম

পরনের কাপড় ছাড়া কিছুই নাই” — অগ্নিকাণ্ডে সব হারিয়ে নিঃস্ব আনোয়ারা বেগম

মোঃ রেজাউল হক শাকিল, নিজস্ব প্রতিবেদক:

কাঁপা কণ্ঠে, চোখ বেয়ে পড়া নিরব অশ্রুধারা “পরনের কাপড়টা ছাড়া কিছুই রইলো না। গয়না নাই, গরু নাই, টেহা নাই, ঘরও নাই… সব কিছু পইড়া ছাই…”
শুধু একজন মায়ের নয়, এক জনমানুষের বুকছেড়া  হাহাকার যেন কেঁপে উঠলো কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার মনোহরপুর গ্রামে। অগ্নিকাণ্ডে সব হারানো আনোয়ারা বেগমের আর্তনাদ শুনে কেঁদে ফেললেন অনেকে। ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) বিকেলে।


মনোহরপুর উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত মোশকত আলী বেপারির ছেলে আবু তাহেরের বসতঘরে হঠাৎই বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন গ্রাস করে নেয় পুরো ঘর এবং পাশের আরও একটি ঘর।
স্থানীয়রা প্রাণপণ চেষ্টা করেন আগুন নেভাতে। কিন্তু দুই ঘণ্টা পর যখন আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে, তখন সব কিছু পুড়ে ছাই। ঘরে থাকা দুইটি গরু বিক্রির নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, কাপড়চোপড়, আসবাব—সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন আবু তাহের ও তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম।
আনোয়ারা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “ঈদের বাজারে গরু দুইডা বেইচা টেহাডাও ঘরেও রাখছিলাম। ভাবছিলাম ঈদের পরে আবার গরু কিনাম। এখন সেই টেহাও নাই, গয়নাও নাই, ঘরও নাই। বাঁচাম কী ক্যাইমনে?”
ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ টাকা বলে দাবি করেন এই পরিবারটি।
খবর পেয়ে সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা জাহান। সেখানে পৌঁছে যখন আনোয়ারা বেগম কাঁদতে কাঁদতে তাকে জড়িয়ে ধরেন, তখন উপস্থিত মানুষও চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।
ইউএনও মাহমুদা জাহান বলেন, “আমি শুধু একজন সরকারি কর্মকর্তা নই, একজন মানুষ হিসেবেও এই পরিবারের পাশে আছি। তাদের এই দুঃসময়ে উপজেলা প্রশাসন পাশে আছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে নগদ অর্থ ও শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ঘর নির্মাণের জন্য ঢেউটিন, আরও সহায়তা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
এলাকাবাসী জানান, আবু তাহেরের পরিবার এখন নিঃস্ব। যাদের একদিন ছিল স্বপ্ন, স্বর্ণ, সম্পদ—আজ তারা আশ্রয়হীন। এ মুহূর্তে মানবিক সহায়তা ছাড়া তাদের পাশে দাঁড়ানোর আর কোনো উপায় নেই। স্থানীয়রা ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে যেন এগিয়ে আসে সকলে। একটি পরিবার বাঁচাতে, আমাদের সহমর্মিতা এখন সবচেয়ে প্রয়োজন।

Tag :
About Author Information

Popular Post

কুমিল্লা-৬, সদর আসনে বাউবন্দ থেকে রাজেন্দ্রপুর পর্যন্ত গণসংযোগ ও শোভাযাত্রা করলেন জামায়াত প্রার্থী কাজী দ্বীন মোহাম্মদ

পরনের কাপড় ছাড়া কিছুই নাই" — অগ্নিকাণ্ডে সব হারিয়ে নিঃস্ব আনোয়ারা বেগম

পরনের কাপড় ছাড়া কিছুই নাই” — অগ্নিকাণ্ডে সব হারিয়ে নিঃস্ব আনোয়ারা বেগম

Update Time : ০২:৩১:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ জুন ২০২৫

পরনের কাপড় ছাড়া কিছুই নাই” — অগ্নিকাণ্ডে সব হারিয়ে নিঃস্ব আনোয়ারা বেগম

মোঃ রেজাউল হক শাকিল, নিজস্ব প্রতিবেদক:

কাঁপা কণ্ঠে, চোখ বেয়ে পড়া নিরব অশ্রুধারা “পরনের কাপড়টা ছাড়া কিছুই রইলো না। গয়না নাই, গরু নাই, টেহা নাই, ঘরও নাই… সব কিছু পইড়া ছাই…”
শুধু একজন মায়ের নয়, এক জনমানুষের বুকছেড়া  হাহাকার যেন কেঁপে উঠলো কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার মনোহরপুর গ্রামে। অগ্নিকাণ্ডে সব হারানো আনোয়ারা বেগমের আর্তনাদ শুনে কেঁদে ফেললেন অনেকে। ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) বিকেলে।


মনোহরপুর উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত মোশকত আলী বেপারির ছেলে আবু তাহেরের বসতঘরে হঠাৎই বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন গ্রাস করে নেয় পুরো ঘর এবং পাশের আরও একটি ঘর।
স্থানীয়রা প্রাণপণ চেষ্টা করেন আগুন নেভাতে। কিন্তু দুই ঘণ্টা পর যখন আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে, তখন সব কিছু পুড়ে ছাই। ঘরে থাকা দুইটি গরু বিক্রির নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, কাপড়চোপড়, আসবাব—সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন আবু তাহের ও তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম।
আনোয়ারা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “ঈদের বাজারে গরু দুইডা বেইচা টেহাডাও ঘরেও রাখছিলাম। ভাবছিলাম ঈদের পরে আবার গরু কিনাম। এখন সেই টেহাও নাই, গয়নাও নাই, ঘরও নাই। বাঁচাম কী ক্যাইমনে?”
ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ টাকা বলে দাবি করেন এই পরিবারটি।
খবর পেয়ে সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা জাহান। সেখানে পৌঁছে যখন আনোয়ারা বেগম কাঁদতে কাঁদতে তাকে জড়িয়ে ধরেন, তখন উপস্থিত মানুষও চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।
ইউএনও মাহমুদা জাহান বলেন, “আমি শুধু একজন সরকারি কর্মকর্তা নই, একজন মানুষ হিসেবেও এই পরিবারের পাশে আছি। তাদের এই দুঃসময়ে উপজেলা প্রশাসন পাশে আছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে নগদ অর্থ ও শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ঘর নির্মাণের জন্য ঢেউটিন, আরও সহায়তা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
এলাকাবাসী জানান, আবু তাহেরের পরিবার এখন নিঃস্ব। যাদের একদিন ছিল স্বপ্ন, স্বর্ণ, সম্পদ—আজ তারা আশ্রয়হীন। এ মুহূর্তে মানবিক সহায়তা ছাড়া তাদের পাশে দাঁড়ানোর আর কোনো উপায় নেই। স্থানীয়রা ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে যেন এগিয়ে আসে সকলে। একটি পরিবার বাঁচাতে, আমাদের সহমর্মিতা এখন সবচেয়ে প্রয়োজন।